সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ১১:২৮ অপরাহ্ন

বেনাপোল বন্দরের অব্যবস্থাপনায় বাণিজ্য ঘাটতি

বেনাপোল প্রতিনিধি, ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ মদানি বাণিজ্যের চাহিদা বাড়লেও বাড়ছে না বন্দরের অবকাঠামো। এতে পণ্যাগারে জায়গা সংকটে কমেছে আমদানি বাণিজ্য। শিল্প কলকারখানার আমদানি পণ্য নামাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। আবার কখনও কাদাপানির মধ্যে। পণ্যজটে যানজট সৃষ্টিতে সড়কে ভোগান্তি বেড়ে চলেছে সাধারণ মানুষের।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ব্যবসায়ীদের। তবে বাণিজ্যের চাহিদা বাড়লেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বাড়েনি বন্দরটিতে। দুর্ভোগ আর হয়রানির মধ্য দিয়ে বছরের পর বছর ধরে আমদানি-রফতানি করতে হচ্ছে। বর্তমানে বন্দরটিতে পণ্য রয়েছে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন। পদ্মা সেতু চালু হলে বাণিজ্যের চাহিদা বাড়বে আরও দ্বিগুণ। কিন্তু বন্দরের ধারণক্ষমতা মাত্র ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। জায়গার অভাবে দিনের পর দিন ট্রাক ও রেল দাঁড়িয়ে থেকে অবশেষে পণ্য নামাচ্ছে খোলা আকাশের নিচে।

বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন আর সড়ক প্রশস্ত করণের দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানানো হলেও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নে সাড়া নেই বন্দরের। এতে ভোগান্তি এখন নিত্য দিনের সঙ্গী হয়েছে ভুক্তভোগীদের।

বেনাপোল সোহাগ পরিবহনের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম জানান, সংকীর্ণ সড়কে পণ্যবাহী ট্রাকের যানজটে যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো আটকা পড়ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এতে যাত্রী ভোগান্তি বেড়ে চলেছে।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, বেনাপোলে আমদানি পণ্য থেকে প্রতিবছর প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ও ভ্রমণ খাতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি রাজস্ব আয় হয়। বন্দরে পণ্যাগার সংকটে আমদানির পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে। এতে এখন রাজস্বও ঘাটতি বেড়ে চলেছে। বন্দরে কিছু উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত তার সুফল ব্যবসায়ীরা পাননি। পদ্মা সেতু এ মাসেই চালু হচ্ছে। তখন ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়বে।

ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, দেশের সরকার অনুমোদিত ২৪টি স্থলবন্দরের মধ্যে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের চাহিদা রয়েছে মাত্র ১২টি বন্দর দিয়ে। অন্যান্য বন্দর দিয়ে বাণিজ্যের চাহিদা না থাকায় এখন আমদানি-রফতানি শুরু হয়নি। সেখানে অযথা কর্মচারীদের বেতন ও জমি কিনে সরকারের টাকা অপচয় হচ্ছে। রাজনৈতিক চিন্তা এড়িয়ে বাণিজ্যিক মনোভাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলোর উন্নয়ন করতে হবে। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন, সরকারেরও রাজস্ব বেশি আসবে।

বেনাপোল বন্দর ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, বন্দরে চাহিদা অনুপাতে জায়গা না পেয়ে ট্রাকচালকরা সড়কের ওপর পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন। এতে সবসময় যানজট লেগে থাকে। বাণিজ্য ও পথচারীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। বন্দরে ট্রাক টার্মিনাল আর ছয় লেন সড়ক হলে পণ্যজট ও যানজট থেকে মুক্তি মিলবে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, বাণিজ্যক সুবিধা বাড়াতে ইতিমধ্যে বন্দরের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। তবে এসব কাজ শেষ হতে এখনও ৩ বছর সময় লাগবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com